সৌরভ, শচীনকে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে দেননি দ্রাবিড়!

Comments · 1373 Views

২০০৭ সালে রাহুল দ্রাবিড়ই ছিলেন ভারতের অধিনায়ক। তাঁর নেতৃত্বেই সেবার ইংল্যান্ডে ভারত জিতেছিল টেস্ট সিরিজ। অথচ, একই বছরের শেষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হলো, আর তাতে ভারত শিরোপা জয়ের গৌরব গায়ে মাখল কিনা মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে!

দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেননি রাহুল দ্রাবিড়। শুধু তা-ই নয়, সেবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেননি শচীন টেন্ডুলকার ও সৌরভ গাঙ্গুলী। ধোনির নেতৃত্বে সেবার বিশ্বকাপ জেতার পর টেন্ডুলকার, সৌরভ ও দ্রাবিড় নিশ্চয়ই এই সিদ্ধান্তের জন্য আক্ষেপে পুড়েছিলেন। টেন্ডুলকার তো তা-ও ২০১১ সালে 'বিশ্বজয়ে'র স্বাদ নিয়েছেন। সৌরভ আর দ্রাবিড় সে সুযোগটাও পাননি।

এই তিন তারকা কেন প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেননি সেটা জানিয়েছেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার লালচাঁদ রাজপুত। দ্রাবিড়ই নাকি সৌরভ ও শচীনকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে না খেলার, 'রাহুলই সৌরভ আর শচীনকে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে দেয়নি। তরুণদের সুযোগ করে দিতেই তাঁরা বিশ্বকাপটা খেলেননি। এই প্রস্তাব ছিল রাহুলেরই। ইংল্যান্ড থেকেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়েরা জোহানেসবার্গ গিয়েছিল। ধোনির নেতৃত্বে বিশ্বকাপ জেতার পর শচীনের খুব আফসোস হয়েছিল।'

২০০৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে প্রথম পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল ভারত। ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের আগে ওয়ানডে বিশ্বকাপটা ভারতের জন্য বড় আক্ষেপের কারণ হয়েই ছিল। শচীন টেন্ডুলকারের জন্য এই আক্ষেপটা ছিল আরও বড়। সৌরভ ২০০৩ বিশ্বকাপে অধিনায়ক হিসেবে ভারতকে ফাইনালে তুললেও রিকি পন্টিংয়ের তাণ্ডবের কাছে হার মেনেছিলেন।

এই কাহিনি আছে সৌরভ গাঙ্গুলীর বিখ্যাত আত্মজীবনী 'আ সেঞ্চুরি ইজ নট এনাফ'-এ। সৌরভ লিখেছেন যে রাহুল দ্রাবিড়ের কথাতেই তিনি ও শচীন টেন্ডুলকার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেননি। কিন্তু সেই আলোচনার কয়েক দিন পরেই দ্রাবিড় অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন। দ্রাবিড় অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেবেন, এটি জানলে তিনি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতেন না বলেই আক্ষেপ করেছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জেতার পরপরই দ্রাবিড় সৌরভ ও শচীনকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে না খেলার অনুরোধ করেন, 'রাহুল আমাদের বলল, আমরা যা অর্জন করেছি, তা বহু বছর অক্ষুণ্ন থাকবে। আমাদের এখন উচিত ভবিষ্যতের দিকে তাকানো। সে আমাদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরামর্শ দিল।'

পরের লাইনেই সৌরভ লিখেছেন নিজের আক্ষেপের কথা, 'আমি সে সময় জানতামই না যে খুব শিগগিরই রাহুল অধিনায়কের পদ থেকে পদত্যাগ করবে। আমাদের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে আলোচনার সময়ও সে আমাদের অধিনায়কত্ব ছাড়ার কথা কিছু বলেনি। আমি যদি এ ব্যাপারে তখন বিন্দু বিসর্গও জানতাম, তাহলে অবশ্যই আমি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিতাম না।'

Comments