করোনায় খেলা থেমে আছে সেই কবে থেকে। তবে মুশফিকুর রহিম থেমে নেই। প্রতিদিন ঘড়ি ধরে ফিটনেস নিয়ে কাজ করেন। ঘরবন্দী থাকতে থাকতে ক্লান্ত মুশফিক অবশ্য মাঝে কদিন বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিলেন রানিং করতে। দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ফিটনেস ট্রেনিং আবার ঘরেই সীমাবদ্ধ করে ফেলেছেন । কিন্তু এভাবে কতদিন?
প্রশ্নটার উত্তর মুশফিক কেন, এ মুহূর্তে কারও দেওয়ার উপায় নেই। যিনি অনুশীলন থেকে দূরে থাকতে পারেন না, ক্রিকেট থেকে দূরে থাকা যাঁর কাছে সব সময়ই 'শাস্তি' মনে হয়; সেই মুশফিক ধৈর্যের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়ে কোনোভাবে কাটিয়ে দিচ্ছেন কঠিন দিনগুলো। তবে অপ্রত্যাশিত এই অবসরে ব্যাটের দিকে যখন তাঁর চোখ পড়ে, মনে তাঁর ভীষণ আফসোসও জাগেকোথায় ব্যস্ত একটা বছর কাটানোর কথা ছিল, সেখানে কাটাতে হচ্ছে ঘরবন্দী জীবন।
ভীষণ টেস্টপ্রেমী মুশফিকের সুযোগ ছিল এ বছর আরও আটটি টেস্ট খেলার। সব টেস্টই স্থগিত। স্থগিত সব দ্বিপাক্ষিক সিরিজও। এ বছর আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা হয় কিনা, সেটা বলাও কঠিন। কোভিড১৯ অতিমারি এলেমেলো করে দিয়েছে পুরো পৃথিবীটাই। এ বাস্তবতা মেনে নেওয়া ছাড়া যেহেতু উপায় নেই, মুশফিক তাই বিষয়টি দেখছেন এভাবে, 'দুর্যোগের ওপর কারও হাত নেই। এটা এভাবে দেখা যেতে পারে, চোটে পড়ে যদি দলের বাইরে চারপাঁচ মাস বাইরে চলে যেতাম, তখন কী হতো? যতটুকু ইতিবাচকভাবে চিন্তা করা যায় আর কী!'
একের পর এক সিরিজ স্থগিত হওয়ায় আফসোস হলেও মুশফিকের কাছে এখন বেঁচে থাকাটাই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম আলোর সঙ্গে কথোপকথনে বললেন, 'একজন খেলোয়াড় হিসেবে কঠিন এক সময় যাচ্ছে। খারাপ তো লাগছেই। আমাদের বয়সও তো হচ্ছে। সেখান থেকে ৬৭টা মাস চলে যাচ্ছে। জানি না কবে আন্তর্জাতিক ম্যাচে ফিরব। তবে সবার আগে জীবন। এখন সুস্থ থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভালো না, বিশেষ করে ঢাকার অবস্থা তো...।'
এক দিকে করোনার ভয়, অন্য দিকে না খেলার হতাশাদুটি ভাবনাই কাজ করছে মনে। নিরাশার মধ্যেই মুশফিক আশা দেখেন, একটা সময় কেটে যাবে এ আঁধার; দেখা মিলবে আরাধ্য আলো। কিন্তু সেই আলোটা দেখা যাবে কবে, অসহায় চোখে মুশফিক তাকিয়ে অনিশ্চিত এক গন্তব্যে, 'আবার যখন শুরু করব তখন অনেক খেলা যাবে। পরিস্থিতি ভালো হলো ঘরোয়াআন্তর্জাতিক সবই শুরু করা যাবে। তবে এ বছর আবার কবে খেলা হবে জানি না।'