কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীতকরণ প্রকল্প শুরু হয় ২০১৫ সালের ২ জুলাই। পুরোপুরি কাজ শেষ না হলেও ২০১৭ সালের ৬ মে থেকে রানওয়েটিতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ওঠা-নামা করছে। বর্তমানেরোহিঙ্গা ইস্যু ও পর্যটন কেন্দ্রের কারণে প্রতিদিনই আকাশপথে কক্সবাজার আসছেনদেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার অসংখ্য কর্মকর্তা। কিন্তু অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বিমানবন্দরটি।
বিমানবন্দরের রানওয়ের ওপর দিয়ে পথচারী যাতায়াতের দৃশ্য দেখা যায় হারহামেশা। শুধু তাই নয়, বিমান অবতরণের সময় হাত দেখিয়ে থামার সংকেতও দেয় তারা।পারাপারের সময় অনেককেমারামারি করতেও দেখা যায়।অবাধে কুকুর ঘোরার দৃশ্য তো রয়েছেই। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যদের চোখের সামনেই ঘটছে এসব ঘটনা। কিন্তুকেউ কিছুই বলছে না। এছাড়া বিমানবন্দরের অনেকাংশে নেই কোনো গাইডওয়াল, আবার যেটুকু আছে তাও জরাজীর্ণ। এতে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা।
বিষয়টি নিয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে যেমন বাড়ছে তেমনি অবকাঠামোরও উন্নয়ন হচ্ছে। যেভাবে বিমানবন্দরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকার কথা সেটা নেই। এছাড়াও যাত্রীদের বসার জায়গা নেই, পর্যাপ্ত স্ক্যানার মেশিন নেই, বিমান বন্দরের চারদিকে গাইডওয়াল নেই। যার কারণে গরু-ছাগল চলাফেরা করে, রানওয়ে দিয়ে এই পারের লোক ওই পারে সহজে যাতায়াত করছে। এখন সব বিষয়ে চিন্তা করতে হবে। যে অব্যবস্থাপনাগুলো রয়েছে সেগুলো বন্ধ করতে হবে। তা না হলে হঠাৎ একটা দূর্ঘটনা আমাদের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।
তবে নিরাপত্তা সম্পর্কিত সমস্যাগুলো শিগগিরই সমাধান করা হবে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক। তিনি বলেন, সিভিল অ্যাভিয়েশন খুব দ্রুত সীমানা প্রাচীর নির্মাণের মধ্য দিয়ে সেখানকার সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্ছ গুরুত্ব দিয়ে রক্ষা করবে।
চরপাড়ার বাসিন্দা রফিক আলম তার স্ত্রী, বোন ও শিশু কন্যা নিয়ে রানওয়ে দিয়ে পার হচ্ছিলেন। এ সময় রফিক বলেন, সিটি কলেজ এলাকায় যাবো। এটা আমাদের জন্য সহজ রাস্তা। তাই কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে দিয়ে সহজে পার হচ্ছি। কেউ বাধা দেয়নি। মাঝেমধ্যে দশ-বিশ টাকা দেয়া লাগে।
কক্সবাজার বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমান, রিজেন্ট এয়ারলাইনস, নভোএয়ার ও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের ৯-১০টি বিমান দৈনিক আসা-যাওয়া করে। এর মধ্যে বোয়িং ৭৩৭ বিমানও রয়েছে। এছাড়াও ৫ থেকে ৬টি কার্গো বিমানও আসা-যাওয়া করে।