গল্প :-
""অন্তঃস্বত্তা মেয়েকে বিয়ে""
.
লেখক:- #Nayem_Ahmed
.
100% কান্না করবেন challenge....শুধু শেষ পর্যন্ত সাথে থাকবেন....
.
★------পর্ব :- ১৩~~~ ♥
.
.
পরের পাতা উল্টটাতেই কথা একটা শর্ক
খায় দেখে একটা কবিতা লেখা কবিতাটি
রাজের লেখা তাহলে রাজ কী তোবার
সাথে সত্যি এমনটি করেছে?
.
কথা কিছু ভাবতে পারছেনা সেই কবিতা
যাহ্ রাজের ফেসবুক আইডি'তে পায়। কথা
পড়তে লাগলো কবিতাটিঃ
.
আমার হৃদয়ে রংতুলি দিয়ে এঁকেছি তোমায়
ছবি!
.
আমি হারিয়েছি আমায়!
তোমারি চোখের মায়াজালে,
মুগ্ধ নয়নে তাকিয়েছি তোমার দিকে,
যখনি তুমি শাড়ি পড়ে এসেছিলে কলেজের
সেই কদমফুল গাছটির তলে।
.
আমি মাতাল হয়েছি,যে তোমার,
এলোকেশের আঁকা-বাকা বাজে।
ভালোবেসেছি তোমায়,
হয়তো পাবোনা জেনেও।
ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করিয়াছি,
তোমায় হৃদয়ের গহীন কোণে।
তুমি কী বুঝেছ কভু?
আমার ছোট্ট হৃদয়ের ভালবাসাটুকু।
যদিও না পাই তোমায়,
তবুও ভালোবেসে যাবো অন্ততকাল।
"" ইতি '
" অতিথি পাখি"
.
কথা বিশ্বাসে আবারো আঁচ লাগলো।
তাহলে রাজ এজন্যই সুসাইড করলো, প্রথমেই
তোবাকে সে নষ্ট করেছিল। আর এই জন্যই
তোবা রাজকে পাওয়ার জন্য এতো কিছু
করেছে। কথা রাজকে অনেকটা ভালোবেসে
ফেলেছে, তার প্রতি রাজের ভালবাসা
দেখে। কিন্তু এসব পড়ে কথার নিজের ওপর
ঘৃণা হচ্ছে।
.
কথা চোখটা মুছে আবারো ডাইরিটা পড়তে
লাগলো।
.
সেদিন তোমার লেখা তোমার লেখা
কবিতা পড়েই তোমার প্রেমে পড়ে যাই।
.
তোমাকে নিয়ে দেখতে থাকি আমার
হাজারো স্বপ্ন। প্রতিরাত তোমার
অজান্তে লুকিয়ে তোলা তোমার ছবিটা
ফোনের ওয়েল পেপারে সেভ করে রেখে চুমু
খেতাম। হারিয়ে যেতাম আমার কল্পনার
রাজকুমারের মাঝে। স্কুল শেষে প্রতিদিন
তোমাকে একনজর দেখার জন্য লেট করে
বাড়ি আসতাম। আর মা বলতো' পাশের
বাড়ির জান্নাত তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে,
তোর ফিরতে এতো লেট হয় কেন"। আমি
কিছু বলতাম না, কারণ তোমাকে একনজর
দেখতে পেলেই আমার সব কষ্ট দূর হয়ে
যেতো। জানো আমার স্বপ্নের রাজকুমার
তোমাকে নীল শার্টে অনেক সুন্দর
দেখাতো। সত্যি বলতে তোমাকে প্রথম
যেদিন কলেজের পাশে নীল শার্ট গায়ে
দিয়ে ভার্সিটির পাশে বাইক নিয়ে
দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি সেদিনই তোমার
প্রেমে পড়ে যায়। পরে জানতে পেয়েছি
তোমার পছন্দের কালার নীল। তাই অনেক
সময় নীল ড্রেস পড়ো!
.
কথা এ পর্যন্ত পড়ে, আর পরতে পারছেনা।
মনে মনে ভাবছে রাজের ও তো নীল
কালার পছন্দ! ডাইরিতে রাজের লেখা
কবিতাটিও তোবা লেখে রেখেছে! তোবা
তো রাজকে অনেক ভালোবাসতো। তা
তোবার লেখা ডাইরির প্রতিটি অক্ষর
সাক্ষী দিচ্ছে!রাজ তো আমাকে
ভালোবাসতো, তাহলে তোবার সাথে কেন
এমন করলো! সত্যি যদি রাজ তোবার সরল মন
নিয়ে খেলে থাকে, তাহলে আমি কার
ভালবাসা নিয়ে বাঁচবো। সজিব আর রাজের
মাঝে তাহলে ফাঁরাক টা কোথায়?
ডাইরিটার ওপর চোখের পানি পড়ার শব্দ
হচ্ছে টপ - টপ করে! ঝাপসা চোখটা বাম
হাতে মুছে আবারো পড়তে লাগলো,
ডাইরিটা।
.
তারপর একদিন আমার স্বপ্নের রাজকুমার
তোমাকে রাস্তায় একা বাইক নিয়ে
দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি। রাস্তাততে কেউ
ছিল না। ভয়ে, ভয়ে তোমাকে দাড়াঁতে
বলি। তুমি বলেছিলে" কিছু বলবেন? "।
.
বিশ্বাস করো সেদিন আমি বোবা হয়ে
গিয়েছিলাম।
আমার সব ভাষা হারিয়ে গেয়েছিল
সেদিন। তুমি আবার বলবে " কি হলো
দাঁড়াতে বললেন, দাঁড়ালাম এখন কিছু না
বলে ফ্যাল-ফ্যাল করে তাকিয়ে আছেন
কেন?"।
.
আমি তোমাকে কিছু বলবো!
.
আচ্ছা বলেন কি বলবেন?
.
আমি তোমাকে ভালবাসি! কথাটা বলতে
গলাটা কেমন ধরে এলো। সারা শরীর দিয়ে
গরম ঝাঝ বের হচ্ছিল। কথাটা বলে যখনি
দৌঁড় দিতে যাবো ঠিক তখনি তুমি আমার
হাতটা ধরে ফেলো। আমার সারা- শরীর
কেঁপে ওঠে, তোমায় ছোঁয়াতে, আজও ভুলতে
পারিনা সেই প্রথম ছোঁয়া।
.
তারপর তুমি বলেছিলে" এ পাগলী আমি
জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো "।
কথাটা বলে জড়িয়ে ধরো আমাকে, আমার
সারা - শরীরে তখন বিদ্যুৎ বয়ে যাচ্ছিল।
তারপর রাস্তার মাঝে,, আকাশ ডাক দিয়ে
বৃষ্টি নামে। তুমি আমাকে শক্ত করে
জড়িয়ে রেখেছিলে। আকাশ থেকে ভয়ংকর
শব্দ করে বজ্র পড়েছিল। আমি ভয়ে
তোমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে
ধরেছিলাম। তারপর বৃষ্টিকে সাক্ষী রেখে
আমার ঠোঁটের সাথে তোমার উষ্ণ ঠোঁট টা
মিলিয়ে দিয়েছিলে। কেমন যে লেগেছিল
আমার তা তোমাকে বলে বুঝাতো
পারবোনা।
.
জানো এরপর প্রায় প্রতিদিনই তোমার
সাথে দেখা হতো। জানো আজও তোমার
ছবিটা ডাইরির ভাজে রেখেছি! আমার
স্বপ্নের রাজকুমার।
.
কথা এ পর্যন্ত পড়ে ডাইরির পরের পাতা
উল্টাতেই, কথার দুনিয়া যেন উলট- পালট
হয়ে যেতে লাগলো। কী দেখছে এসব।
কোনদিন কল্পনাও করতে পারেনাই, তোবার
জীবনটা এই নষ্ট করবে। কত বিশ্বাস
করেছিল মা- বাবা।আমি নিজেও বিশ্বাস
করেছিলাম। কথা চোখে যেন অন্ধকার
দেখছে। কেন এমন করলো, একটা মানুষ এতটা
মুখোশধারী হয় কেমনে? পৃথিবীতে এত
খারাপ মানুষও হয় নাকি, বিশ্বাস করা খুব
কষ্ট হচ্ছে।
কারণ ছবিটা যে আর কারো নয় " ছবিটা
হচ্ছে, কালপির্ড সজিবের"। সজিব কে মনে
হচ্ছে কবর থেকে তুলে নিজে খুন করি। নাহ্
তাকে হাজার বার খুন করলেও তার
অপরাধের বিন্দুমাএ শাস্তি হবেনা যে
অপরাধ করেছে। আমার নিঃশ্বাপ ফুলের
মতো বোনটার কোমল জীবন নষ্ট করেছে।
বোনটা পাগলপ্রায় হয়ে গেছে। রাজের
বোন কণাকে নষ্ট করে আত্মহত্যা করতে
বাধ্য করেছে। আমার ভালবাসার সাথে
প্রতারণা করেছে সরল মনে বিশ্বাস
করেছিলাম কালর্পিড টাকে। ওর জন্য
রাজের ফুলের মতো পবিএ ভালবাসাকে
বুঝতে পারিনা। অবহেলা করেছি আমার
স্বামীকে। যে মানুষটা শত কষ্ট বুকে নিয়ে
একটু ভালবাসা চেয়েছিল তাকে ঘৃণা ছাড়া
কিছু দিতে পারিনি। আমি সত্যিই অনেক
অপরাধী। কেমনে কষ্ট দিলাম, আমি সারা
পৃথিবীর ভালবাসাকে অপমান করেছি,
রাজের ভালবাসাকে অপমান করে! কারণ
যে মানুষটা বন্ধুর মুখের হাসির জন্য নিজের
ভালবাসাকে কুরবাণী দিতে পারে! তাঁর
ভালবাসা কতটা পবিএ। যে মানুষটা
ভালবাসার মানুষ অন্তঃসন্তা হওয়া সত্বেও,
তাঁর ভালবাসার মানুষকে বাঁচাতে বিয়ে
করে স্ত্রীর অধিকার দেয়। নিজের বোনের
খুনির সন্তানকে নিজের পরিচয় দেয়, কতটা
ভালবাসলে এতটা ত্যাগ করতে পারে একটা
মানুষ। আর আমি এতই হতভাগী আমার
স্বামীকে খুন করার জন্য দুধে ঘুমের ঔষধ
মিশিয়ে দেয়! আল্লাহ্ আমাকে ক্ষমা করো,
আমার নিজের জীবনের বিনিময়ে আমার
স্বামীর জীবন ভিক্ষা দাও। আল্লাহ
স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা পবিএ তুমি
বলেছে। তুমি কবুল ককরে ননাও আমাদেরকে!
চোখ জোড়া আজ কোন বাঁধা মানছেনা
অঝরো আষারো শ্রাবণ ঝরছে। নিজেকে
কীভাবে সান্ত্বনা দিবে সে! চোখ দিয়ে
মনে হয় রক্ত বের হবে এতটা কষ্ট কেন হচ্ছে।
চোখ মুছে ঝাপসা চোখে ছবিটা সরিয়ে
আবার ডাইরিটা পড়তে লাগলো কথা-
.
আজ আমি অনেক হ্যাপি,কারণ আজ স্বপ্নের
রাজকুমার সজিবকে প্রাইভেট টিউটর
হিসেবে বাসায় নিয়ে এসেছি। মা- বাবা
সজিবের সাথে কথা বলে নিজের ছেলেদের
মতো করে নিয়েছে। এখন পড়ার টেবিলে
বসে হা করে তাঁকিয়ে দেখি আমার
স্বপ্নের রাজকুমারটাকে। তবে কথা আপুকে
অনেক ধন্যবাদ, আপুর সাথে সজিবের অনেক
আগে থেকেই পরিচয়। আপু ও বলেছে সজিব
ভালো ছেলে তাই যখন তখন আসতে পারতো
সজিব আমাদের বাসায়।
.
দিনগুলি ভালোই কাটতেছিল। লুকিয়ে পড়া
ফাঁকি দিয়ে সিনেমা দেখা।পার্কে
বেড়ানো কত ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত কাটিয়েছি। তবে
সজিবের সাথে ফ্যাজিক্যালি কোন
রিলেশন হয়নি। সজিব অনেক বলেছে, কিন্তু
আমি না করেছি। একদিন সজিব আমাকে
প্রমিজ করে আমাকে সজিব বিয়ে করবে।
আর আমি সেদিন থেকে সজিবকে নিজের
স্বামী মনে করি। কিন্তু ফ্যাজিক্যাল
রিলেশন হয়নি তখনো। একদিন নানা- নানী
অসুস্থ হয়ে পড়লে,মা- বাবা নানা বাড়ি
চলে যায়। বাসায় আমি আর আপু। সজিবকে
ফোন দিয়ে বলেছি মা - বাবা আজ
আসবেনা। তুমি প্রাইভেট পড়াতে এসো না।

♥-----"To be Continue"---♥
.