Nurul Islam Sumon created a new article
6 yrs

স্ত্রীর সামনেই হট সেনসেশনের সঙ্গে একি করলেন অজয়! | #

স্ত্রীর সামনেই হট সেনসেশনের সঙ্গে একি করলেন অজয়!

স্ত্রীর সামনেই হট সেনসেশনের সঙ্গে একি করলেন অজয়!

image

দেড় বছর বয়স পেরিয়ে যাওয়া স্বত্বেও আমি যখন হাঁটতে শিখলাম না। তখন আমার পরিবারের সবার টনক নড়লো। আড়ে ঠাঁড়ে আম্মাকে কেউ কথা শোনাতে দ্বিধা বোধ করলেন না। অনেকে রিতিমত দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। আর মুখের উপর বলেই ফেললেন - বাচ্চাটা মনে হয় হাঁটতে পারবে না। ওরে হুইল চেয়ার কিনে দিতে হবে। কোলে আর কয়দিন?

আমার আম্মা তখন হয়তো বড় হাঁড়িতে ডাল বা তরকারী বাগার দিতে ব্যস্ত। আর তার কোলে অবধারিত ভাবে ঝুলছি আমি। একান্নবর্তী সংসার, কাজ একটু বেশি। এদিকে আম্মাকে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়। বাড়ি ভর্তি মেহমান। পিঠে বানানো হচ্ছে। কাজের সুবিধার জন্য আম্মা আমাকে ওড়নায় বেঁধে পিঠে ঝুলিয়ে নিয়েছেন। তবুও একা রুমে রাখেন নি। যদি খাট থেকে পড়ে যাই।

আমার বয়স তখন দুই বছর। আম্মা আমাকে বসিয়ে রেখে দুধ জ্বাল দিচ্ছেন। আমি আস্তে করে হেঁটে গিয়ে আমার স্যান্ডেল টা বাইরে থেকে এনে রুমে রাখলাম।
কাকি এটা দেখে চেঁচিয়ে উঠলেন " নিতুর মেয়েতো হাঁটতে পারে।"

সেদিন রাতে বড় আম্মা কাকি, আম্মাকে চেপে ধরলেন "মেয়ে যে হাঁটতে পারে, তুমি জানোনা!"
- জানিতো।
- তাহলে ওকে হাঁটতে দাওনা কেনো?
- সারাজীবন হেঁটেই বেড়াতে হবে, থাকুক কিছুদিন কোলে। আম্মার সরল স্বীকারোক্তি।

আমার আম্মার কোনো দামি শাড়ি নেই। নেই জি বাংলা স্টার প্লাস দেখা ডিজাইনের গহনা। বিয়েতে আমার বিধবা নানু, আর আমাদের বাড়ি থেকে যা দিয়েছিলো। সংসারের হাল শক্ত রাখতে তার অধিকাংশই মা বিক্রি করেছেন।

আমার বোনকে একবার ভুল ওষুধ খাইয়ে দিয়েছিলেন আম্মা। আব্বা বাড়ি নেই। আম্মা হাতের বালা বিক্রি করে হাসপাতালের বিল আর ঔষধ কিনেছেন। আমার বোন কে নিয়ে যেদিন বাড়ি ফিরি, সেদিন ওই প্রথম বলেছিলো " আম্মাল হাতে তুলি নাই নাই "।

আমাদের এই মধ্যবিত্তের সংসারে আমার মা একদম বেমানান। আম্মাকে জড়িয়ে ধরলে আমি আজো পাই মশলার গন্ধ। আমার মা সুগন্ধি মাখেন না। আমরা হঠাৎ মেখে দিতে চাইলে বলেন - থাক, তোমরা মাখো। তোমাদের জন্য এসব দরকার। আমার মেয়েরা সুন্দর থাকলেই হোলো। মায়েদের এতোকিছু লাগেনা।

আমার মাকে বেশিরভাগ ঈদে নতুন শাড়ি পড়তে দেখিনি। কেনা হয়তো হয়েছে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে হয়তো এমন একজন মেহমান এসেছে বা লিষ্টে বাদ পড়েছে। আমার মা আগে তার শাড়িটিই বের করে দিয়েছেন। পুরো ঈদের দিন মনটা খচখচ করেছে। কিন্তু আম্মা দিব্যি পুরাতন শাড়িতেই আমাদের জন্য সেমাই, পায়েশ, রেঁধেছেন। গোসল করে আগের একটা ধোয়া শাড়ি পড়ে মিষ্টি করে হাসছেন। আমার কাছে এটাই পৃথিবীর সেরা সুন্দর দৃশ্য।

আম্মা একবার অনেকদিন হাসপাতালে ছিলেন।
আমরা দু'বোন আম্মার পাশে দিনরাত বসে থাকতাম। বিকেলে ভিজিটিং আওয়ারে কেউ না কেউ খাবার আনতেন। তখন আমরা ভাত খেতাম। খানিকটা ভাত রেখে দিতাম রাতে খাবার জন্য। আব্বা আমাদের হাতে টাকা দিয়ে রাখতেন। সকালে নাস্তা খাবার জন্য। সোরয়ার্দী হাসপাতালের মেঝে আর বারান্দায় শোয়া শত শত রুগী পেরিয়ে। আমরা সকালের খাবার কিনতে যেতাম না।

একদিন বিকেলে আম্মাকে কেউ দেখতে এলোনা। আমরা চুপ করে আছি। সন্ধ্যা পেরুচ্ছে। রাত এলো। দু'বোন বাইরে একটু ঘুরে এসে এমন ভাব করলাম। যেনো খেয়ে এসেছি। আম্মা যতোবার বলেন - বাবা খাইছো? আমরা বলি - হ্যা ক্লান্তিতে কখন জানি ঘুমিয়ে পড়েছি। রাত দশটার দিকে আম্মা ডেকে তুললেন। ঘুম ভেঙে দেখি আম্মার হাতে সদ্য রান্নাকরা গরম ভাত। সাথে ডিম ভাজি আর ডাল। আম্মা বড় বড় লোকমায় আমাদের দু'বোনকে খাইয়ে দিচ্ছেন। আর উনার চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।
আম্মা কি করে বুঝলেন, আমরা না খেয়ে আছি। আর ডালভাত ডিম ভাজিই বা কোথাথেকে যোগাড় করলেন, আমি জানিনা। হয়তো মা বলেই সব বুজেছেন।

যতোবার পরীক্ষা দিতে গিয়েছি। আম্মা সাথে গিয়েছেন। আর হলের বাইরে দাঁড়িয়ে দোয়া দরূদ পড়েছেন।
এসএসসি পরীক্ষার সময়ে টাইফয়েডে পড়লাম। যা খাই বমি করি। ঘাড় বাঁকা হয়ে গেলো। আম্মা ধরে ধরে পরীক্ষার হলে নিয়ে যেতেন। সবাই যখন গোল্ডেন এ প্লাস পেলো। আমার তখন ভয়াবহ খারাপ রেজাল্ট। আমি কাঁদছি চিৎকার করে।
আমি আবার পরীক্ষা দিতে চাই। আম্মা হেসে বললেন। আরে বোকা যারা গোল্ডেন পেয়েছে তারাও কলেজে পড়বে, সেই সাথে তুমিও। আবার পরীক্ষা দিলে তুমি স্কুল ছাত্রী হয়ে যাবে।

বড় আপার ( চাচাতো বোন) বিয়ে দেয়া হয়েছে সম্প্রতি। আব্বু মোটামুটি নিঃশ্ব। বড় আব্বু বেঁচে নেই। তাই আম্মা আব্বুর মাথায় অনেক দুঃশ্চিন্তা। ভাইয়া বিসিএস দিচ্ছেন। অন্য চাকরিও ছেড়ে দিয়েছেন। এমন সময়ে এলো পহেলা বৈশাখ। আমরা চুপচাপ আছি। সেবার ও আম্মা আমাদের রাতে ডেকে তুললেন। আমাদের সাথে নিয়ে বৈশাখী জামা আর নতুন স্যান্ডেল কিনে দিলেন। সারাদিন জামা পড়ে ঘুরলাম। রাতে বললাম - আম্মা তোমার নতুন শাড়ি কই?
আম্মার জবাব - আম্মাদের এতোকিছু লাগেনা।

আমি বাইরে গেলে, আমার মা আমার অপেক্ষায় থাকেন। মাংসের ভালো টুকরা, মাছ ভাজির মুচমুচে অংশটা নিজের পাতে পরলেও এনে আমাদের মুখে তুলে দেন। আমি বলি - আম্মা তুমি খাও। আম্মার এক উত্তর "আম্মাদের এতোকিছু লাগেনা।"

আজ মা দিবস বলে, মা'কে নিয়ে লিখছি এমন না। আমার মা আমার অনুপ্রেরণা। যার কাছে পৃথিবীর সব দুঃখ কষ্ট জমা রাখা যায়। সবুজ পান্না আর ঝকমকে হিরে আমাদের সংসারে নেই। তবে আছে মিষ্টি একটা হাসি 'যা আমাদের দেখলেই আমার মায়ের চোখে মুখে ফুটে ওঠে।

আমি ভালোবাসতে শিখেছি আমার মায়ের কাছ থেকে। ধৈর্যর যদি কখনো বাঁধ ভেঙে যায়। আমি আমার মায়ের দিকে তাকাই। "আমি সইতে শিখেছি আমার মায়ের কাছ থেকেই। এইতো আমার সাধারণ মা, সুতি জামা পড়া, নিরাভরণ গয়না ছাড়া, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আদর আর আবদারের জায়গা । এই হঠকারিতার রঙিন ফানুস জীবনে একমাত্র এই মানুষটিই নিঃস্বার্থ ভাবে নির্দ্বিধায় বলতে পারে " মায়েদের এতো কিছু লাগে না।"

#আমার মা

#Copied.

MD RAJU changed his profile picture
6 yrs

image
Abdullah Rasel changed his profile picture
6 yrs

image

এই আমার দেশ!! ??
আল্লাহ !! তুমি ওদের হেদায়াত দান করো। ??
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাছে আবদার থাকবে ধর্ষক দের গণহারে ক্রস ফায়ার করা হোক, তাহলে এর পর আর কেউই এই রকম জঘন্য কাজ করতে পারবে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভালো রাখতে ও সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ দেখতে দেশের সরকারের এই পদক্ষেপটি নেওয়া খুবই প্রয়োজন.. ??
#Change_the_system_of_justice. Please.

image

image
Mohammad Nasir Hossain changed his profile picture
6 yrs

image

image
image
image

image