শাহ নেয়ামত উল্লাহ ওয়ালী মসজিদ | Sah Niamatullah Masjid
ইতিহাস
শাহ সুজার রাজপ্রাসাদ তাহখানা এর পাশেই শাহ নেয়ামত উল্লাহ ওয়ালী মসজিদ টি অবস্থিত। এর পাশেই অত্র অঞ্চলের বিখ্যাত ধর্মপ্রচারক শাহ নেয়ামত উল্লাহ এর সমাধী রয়েছে। সে থেকে ধারণা করা হয় যে শাহসুজার তত্তাবধানেই মসজিদটি নির্মিত হয়েছিলো।
তবে এ ব্যাপারে কোন প্রকার শিলালিপি পাওয়া যায় নি। শাহ সুজা বাংলার সুবাদার মোগল সম্রাট শাহজাহানের দ্বিতীয় ছেলে। তিনি১৬৩৯ থেকে ১৬৬০সাল পর্যন্ত বাংলা শাসন করেন ।স্থাপত্যকর্মের প্রতি তার বিশেষ অনুরাগ ছিল। তার সময়ে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় বেশ কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছিল।
তন্মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত স্থাপনাটি হলো বড় কাটরা । এছাড়াও লালবাগ মসজিদ ও শাহী ঈদগাহ (ধানমন্ডি) তৈরি করা হয়েছিল। এ ছাড়া কুমিল্লায় রয়েছে শাহ সুজা মসজিদ। তার সময়ে নির্মাণ করা হয় বড় কাটরা , হোসেনী দালান ,ঈদগাহ ও চুড়িহাট্টা মসজিদ । শাহ সুজা রাজমহলে একটি প্রাসাদ (সাঙ্গ-ই-দালান) ও মসজিদ তৈরি করেছিলেন ।
শাহ সৈয়দ নেয়ামতউল্লাহ হলেন মধ্যযুগের একজন প্রখ্যাত ইসলাম প্রচারক। তিনি তৎকালীন গৌড়ে(চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্থান) ইসলাম প্রচার করেন।তার পূর্বপুরুষেরা ছিলেন মক্কার বনু আসাদ গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। ইসলাম প্রচারের জন্য তারা ভারতবর্ষে আগমন করেন। তিনি সুলতান শাহ সুজার সময়ে দিল্লীর " করোনিয়ার " নামক স্থান থেকে রাজমহলে আসেন ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে ।
শাহ সুজা তাকে অভ্যর্থনা জানান এবং তারনিকট বাইআত গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি গৌড়ের উপকন্ঠে (বর্তমানে ফিরোজপুরের শিবগঞ্জ উপজেলায়) স্থায়ীভাবে আস্তানা স্থাপন করেছিলেন । এই অঞ্চলে তিনি দীর্ঘদিন যাবত সুনামের সঙ্গে ইসলাম প্রচার করেন । ফিরোজপুরেই ১৬৬৪ / ১৬৬৯ সালে তাকে সমাধি দেওয়া হয় । শাহ সুজা বাবা নেয়ামত উল্লাহ (র) এর বসাবসের জন্য সেখানে ছোট**** মসজিদের পাশেই খানকাহ ও দৃষ্টিনন্দন তহখানা নির্মাণ করেন।
পরে তিনি গৌড়ের উপকন্ঠে (বর্তমান শিবগঞ্জ উপজেলা) ফিরোজপুরে স্থায়ীভাবে আস্তানা স্থাপন করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রায় ৩৫ কি.মি. দূরেুত্বে অবস্থিত শিবগঞ্জ উপজেলার শাহাবাজপুর ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী তোহাখানা কমপ্লেক্স এর অভ্যান্তরে শাহ নেয়ামতউল্লাহ এর তিন গম্বুজ মসজিদের উত্তরে শাহ নেয়ামতউল্লাহ এর মাজার অবস্থিত।
এর উদ্দেশ্যে শীতকালীন বাসের জন্য তাপনিয়ন্ত্রণ ইমারত হিসেবে তাহখানা নির্মাণ করেছিলেন। তোহাখানা ফার্সি শব্দ, যার আভিধানিক অর্থ ঠান্ডা ভবন বা প্রাসাদ। সময়ে সময়ে শাহ সুজাও এখানে এসে বাস করতেন।
বিভিন্ন ঐতিহাসিক গ্রন্থ হতে জানা যায়, শাহজাহানের পু্ত্র শাহ সুজা বাংলার সুবাদার থাকাকলে ১৬৩৯-১৬৫৮ খ্রিঃ মতান্তে ১৬৩৯-১৬৬০ খ্রিঃ তার মুর্শিদ সৈয়দ নেয়ামতউল্লাহ প্রতি ভক্তি নিদর্শনের উদ্দেশ্যে তাপনিয়ন্ত্রিত ইমারত হিসেবে তোহাখানা নির্মাণ করেন।
জনশ্রুতি আছে যে-শাহ সুজা যখন ফিরোজপুরে মোরশেদ শাহ নেয়ামতউল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাত করতে আসতেন তখন উক্ত ইমারতের মধ্যবর্তী সুপ্রশস্ত কামরাটিতে বাস করতেন। তোহাখানা কমপ্লেক্সের ভেতরে আরো নাম না জানা অনেক সমাধি দেখা যায়।
যাদের পরিয় এখনো জানা যায় নি। তবে এদেরকে হযরত শাহ সৈয়দ নেয়ামতউল্লাহর খাদেম বা সহচর বলে ধারণা করা হয়।
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া
ছবিঃ গুগল